ঈদ উপলক্ষে পাকিস্তানের পর এবার বাংলাদেশেও নিষিদ্ধ ভারতীয় ছবি। এমনই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। রায়ে বলা হয়েছে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, পূজা এবং বাংলা নববর্ষের সময় ভারতীয় বাংলা, হিন্দি ও পাকিস্তানি ছবি সহ বিদেশি ছবি আমদানি, বিতরণ ও প্রদর্শন করা যাবে না। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনার নির্মিত কোনও ছবি তৈরি হলে সেই সিনেমা প্রদর্শনে বাধা থাকবে না।
বুধবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন।
নিষেধাজ্ঞার জেরে ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান ও টলিউড অভিনেত্রী শ্রাবন্তী, পায়েল অভিনীত ছবি ‘ভাইজান এলো রে’। কারণ জানা যায় এটি যৌথ নয় ভারতের একক প্রযোজনার ছবি। ঈদেই মুক্তি দেওয়ার জন্য অনেক পরিশ্রম দিয়ে দেশ বিদেশে শুটিং করে অনেক টাকা ইনভেস্টের মাধ্যমে খুব তারাতারি প্রস্তুত করছিলেন ছবিটি। ঈদে বাংলাদেশে মুক্তি না পেলে ছবিটিতে লোকসানেই গুনতে হতে পারে ছবির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে মুভিজকে।
একইভাবে টলিউড স্টার জিত্ অভিনীত ‘সুলতান’ ছবির প্রদর্শন আপাতত ঢাকার সিনেমাহলগুলিতে হচ্ছে না। এই ছবিতে জিতের সঙ্গে অভিনয় করছেন বাংলাদেশি অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মীম ও প্রিয়াঙ্কা সরকার। ফলে ছবির বাংলাদেশি ডিস্ট্রিবিউটর ‘জ্যাজ মাল্টিমিডিয়া’ বিপাকে।
বাংলাদেশি কলাকুশলীদের একাংশ ও সিনেমা শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের অনেকেরই অভিযোগ, বলিউড-টলিউডের হিন্দি ও বাংলা, পাকিস্তানি উর্দু ছবি সহ ইংরাজি ভাষার হলিউডি বিদেশি ছবি আমদানির কারণে দেশীয় চলচ্চিত্রের ওপর দর্শক আগ্রহ হারাচ্ছে। আরও অভিযোগ, কলকাতার বিভিন্ন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা টুরিস্ট ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসে অভিনয় করছেন। তাঁরা ওয়ার্ক ভিসা না নেওয়ায় সরকারের ক্ষতি হচ্ছে। অথচ, বাংলাদেশি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ভারতে গিয়ে কাজ করার জন্য ওয়ার্ক ভিসা নিতে হয়।
বিতর্ক আদালতে গড়ায়। হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ। সেই আবেদনের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, দেশে যৌথ প্রযোজনার ছবি চলতে কোনও বাধা নেই। তবে, আমদানি করা সিনেমা প্রদর্শনে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা বহালই থাকছে।
প্রতিবছর ঈদ ও দুর্গাপুজো উপলক্ষে বলিউড ও টলিউডের একাধিক ছবি কলকাতা ও ঢাকায় মুক্তি পায়। সেই ছবি দেখার জন্য মুখিয়ে থাকেন ঢাকার দর্শকরা। এরফলে মার খায় ঢালিউডের নিজস্ব ছবি। বাংলাদেশের মতো পাকিস্তানেও বলিউডি ছবির কদর প্রবল। সেই দেশেও এবার আদালতের রায়ে ইদের মরশুমে বন্ধ করা হয়েছে ভারতীয় ছবির প্রদর্শন।