ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দার হিরো আরেফিন শুভ। জোড়ালো পরিচিতি পাওয়া শাকিব খান এবং জাজ মাল্টিমিডিয়ার হাত ধরেই। এরপরেই পায় একের পর এক ছবির ডাক। এরেই ধারাবাহিকতায়, দীপঙ্কর দীপনের পরিচালনায় ঢাকা আট্যাক ছবিতে অভিনয় করে ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ সাড়া জাগায় এই নায়ক।
এরপর মিশন এক্সট্রিম ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হন আরেফিন শুভ। ছবিতে চরিত্রের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে বডি ট্রান্সফরমেশন করেছেন তিনি। এজন্য নয়মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমে ৯৪ কেজি থেকে কমে ৮৪ কেজি হয়েছেন। কমিয়েছেন মেদও। সম্প্রতি সেই গল্পই তুলে ধরেছেন তার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে। ‘ফ্যাট টু ফিট’ নামে আরেফিন শুভ’র সেই ট্রান্সফরমেশান ভিডিও লুফে নিয়েছে দর্শক। চরিত্রের জন্য শুভর প্রচেষ্টা সব মহলে প্রশংসিত হচ্ছে।
তবে বিপত্তি বাঁধাচ্ছে তার কিছু ভক্ত। শুভর এমন প্রত্যাবর্তনে অনেকেই তাকে নিয়ে নোংরা পলিটিক্স করছেন। ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানকে জেলাসি করে শুভকে দেখিয়ে দিচ্ছেন। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন শাকিব ভক্তদেরকেও। তাদের এমন চ্যালেঞ্জকে অনেকেই অনেক ভাবে মোকাবিলায় করছেন। এ নিয়ে শান্ত নামের এক ভক্ত এবং বাংলা সিনেমার শুভাকাঙ্কি তার নিজস্ব যুক্তি দিয়েছেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে। সেই যুক্তিটিই সরাসরি তুলে ধরছি আরেফিন শুভর ভক্তদের জন্য। শান্ত লিখেছেন, শুভর ভক্তরা শাকিব খানের বিরুদ্ধে কোন যুক্তিতে চ্যালেঞ্জ ছোড়ে?
শাকিব খান তো শুভর মতো নয় মাস পর্যন্ত সব কাজ ছেড়ে জিম এ কাটায় নাই। শাকিব খান বছরে ১ ডজন মুভি তৈরি করে। যেখানে শুভ ১ বা ২ টি মুভি করে। শাকিব যদি শুভর মতো এইরকম ১ বা ২ টি মুভি করতো তাহলে ইন্ডাস্ট্রি এতোদিনে মায়ের ভোগে চলে যেতো।
শুভ এতোদিন সময় নিয়ে মুভি করার পরও তার ক্যারিয়ারে ৫৭.৪৫% ফ্লপ। বাকি গুলে হিট হলেও এক ঢাকা আট্যাক ছাড়া তার ক্যারিয়ারে ব্লকবাস্টার কোনো মুভি নেই।
অন্যদিকে শাকিব খানের বিগত ১০ বছরে ১০৬ টা মুভির মধ্যে সত্তা, শাহেনশাহ এবং এক কাপ চা এই তিনটি মুভি ছাড়া আর কোনো ফ্লপ মুভি নেই। যদিও শাহেনশাহ মুভিটি করোনা ভাইরাসের কারণেই ফ্লপ হয়েছিলো, এক কাপ চা মুভিতে শাকিব খান ছিলো অতিথি চরিত্রে এবং সত্তার মতো মুভির মর্ম দেশের মানুষ বুঝে না। শাকিব খানের ক্যারিয়ারে ২০% এর অধিক মুভি ব্লকবাস্টার, হিট মুভি প্রায় ৭৫% এর অধিক আর ফ্লপ মুভি ২৫% এরেও কম যার সিংহভাগ মুভিই ছিলো ২০০৮ সালের আগে।
সুপারস্টার হওয়ার জন্য শুভ ভাইয়ের মতো সিক্স প্যাকের দরকার পরে না, সুপারস্টার হওয়ার জন্য ফিটনেসের দরকার পরে যা শাকিব ভাইয়ের আছে। সিক্স প্যাকের দরকার পরে আ্যাকশন হিরো হতে গেলে। যদি সিক্স প্যাক দিয়ে সুপারস্টার হওয়া লাগতো তাহলে বলিউডের রজনীকান্ত, অমিতাভ বচ্চন এবং শাহরুখ খানরা কখনো সুপারস্টার হতে পারতেন না।

অনেকেই বলেন শাকিব খান অনেক বস্তা পচা মুভি করেছেন, হ্যাঁ ভাই করেছে, ইন্ডাস্ট্রি কে বাঁচানোর জন্য করেছে। আর তখন যদি শাকিব খান ঐ ধরণের বস্তা পচা মুভি না করতো তাহলে এতো দিনে ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংস হয়ে যেতো। ফলে আপনাদের শুভ ঢাকা আ্যটাক এবং মিশন এক্সট্রিমের মতো মুভি করা তো দূরের কথা হিরো হওয়ার সুযোগ হতো কিনা তাও সন্দেহের ব্যাপার। তাই বলতে চাই, আপনি যদি শুভর ফ্যান হন তবে আপনাকে শাকিব খানের ডাইহার্ড ফ্যান হতে হবে, আপনার যদি শুভকে ভালো লাগে তাহলে শাকিব ভাইকে ভালোবাসতে হবে।
আমি এইসব বলছি বলে আমি শুভ ভাইয়ের হেটার্স নই। আমিও তার ফ্যান। আমি অপেক্ষা করছি তার মিশন এক্সট্রিম দেখার জন্য। নয় মাস পরিশ্রম করে শুভর সিক্স প্যাক করা প্রশংসনীয়, কিন্তু এতো বেশী প্রশংসা করবেন না যাতে কিছুদিন পর ইয়া বড় ভূরী নিয়ে বের হয়।
সর্বোপরী, শাকিব শুভর মধ্যে আমি কখনো দ্বন্দ্ব দেখি না, আমি দেখেছি তাদের মধ্যে ভালোবাসা আর সম্মান। সমস্যা আমাদের মধ্যে। আমরা যদি শুভ বা শাকিবের জন্য ভালো কথা বলতে না পারি তাহলে অন্তত খারাপ কথা বলা থেকে দূরে থাকি।
পরিশেষে অনলাইন টিভি বাংলা বলতে চায় মাঠে সেঞ্চুরি মারলেই দলের বেস্ট প্লেয়ার হওয়া যায় না, দলকে জিতাতে পারলেই সাফল্য।
তো বন্ধুরা ঢালিউড সুপারস্টারকে আরেফিন শুভর ভক্তদের এমন চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে আপনাদের কি মতামত, তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ভিডিও: